চেরাগি পাহাড় Cheragi Pahar Square
চেরাগি পাহাড় বাংলাদেশের চট্টগ্রামের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এটি নগরীর জামাল খান সড়ক এবং মোমিন সড়কের মধ্যস্থলে অবস্থিত। চট্টগ্রামের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার বিচরণক্ষেত্র হিসেবে চেরাগি পাহাড় একটি প্রসিদ্ধ স্থান। চট্টগ্রামের কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মী, পাঠক-লেখক, সংগঠকদের মিলনস্থল হিসেবে চেরাগি পাহাড়ে পরিচিত।[১] বর্তমানে এই স্থানে চেরাগী পাহাড় নামে কোন পাহাড়ের অস্তিত্ত্ব না থাকলেও এখানে তিন রাস্তার সংযোগ স্থলে রয়েছে চেরাগ আকৃতির স্থাপনা। এই স্থাপনাই বর্তমানে চেরাগি পাহাড় নামে পরিচিত।
ইতিহাস
কিংবদন্তি অনুসারে ১৪ শতকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে সুফি সাধক বদর আউলিয়া আরব থেকে সমুদ্রে ভাসমান একটি পাথরে আরোহন করে এগারোজন দরবেশ সহ চট্টগ্রাম এসেছিলেন। এই বারোজন দরবেশের মধ্যে বদর আউলিয়াকেই প্রধান হিসেবে সম্মানিত করা হয়। বদর আউলিয়ার ইসলাম প্রচারের সূত্র ধরে চট্টগ্রামকে ‘বারো আউলিয়ার দেশ’ (বারো দরবেশের দেশ) বলা হয়।[২] তিনি তার অলৌকিক চেরাগ হাতে জন-মানবহীন পাহাড় পর্বতে ঘেরা চটগ্রামের একটি পাহাড়ে উঠলে জ্বীন-পরীরা তাকে বাধা দেয়। পরে তিনি তার চেরাগ রাখার বিনিময়ে পাহাড় ত্যাগ করেন। অতঃপর তার অলৌকিক চেরাগের বিকিরণের তেজ সহ্য করতে না পেরে জ্বীন-পরীরা চট্টগ্রাম ছেড়ে প্রস্থান করে। কালক্রমে এখানে জনবসতি গড়ে উঠে এবং সেই পাহাড়টি চেরাগি পাহাড় নামে পরিচিতি লাভ করে।
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম
চেরাগি পাহাড় এলাকায় চট্টগ্রামের স্থানীয় কবি, লেখক, সাহিত্যিক, লিটল ম্যাগাজিনের কর্মী, শিল্পী, সঙ্গীতজ্ঞ, সাংবাদিক, নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মিলনস্থান।[৩]
চট্টগ্রামভিত্তিক দৈনিক পত্রিকা, বিরোধীদলীয় পত্রিকা, ব্যবসায়িক পত্রিকাসহ বেশকিছু পত্রিকা এখান থেকে প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে দৈনিক আজাদী আন্যতম। পাশাপাশি রয়েছে সাংস্কৃতিক-বইয়ের দোকান, প্রকাশনা সংস্থা, ছাপাখানা, হকার সমিতির কার্যালয়, টেলিভিশন চ্যানেলের কার্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্ট।[১]
২০১২ সালে, এখানে একটি স্থান-নির্দিষ্ট শিল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে তরুণ শিল্পী এবং কিউরেটররা তাদের প্রদর্শনীতে নতুন শিল্প ফর্ম এবং মিডিয়া নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।[৪] পরবর্তীতে ২০১৩ সালেও ধারাবাহিকভাবে এ অয়োজন করা হয়।